ফেসবুক রিলস বাংলাদেশে প্রতি ১০০০ ভিউ কত টাকা দেয়?
ফেসবুক রিলস যা এখন বিশ্ব একটি বড় প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে, বাংলাদেশও ধীরে
ধীরে এটি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি কেবল বিনোদনের জন্য নয় বরং আয়ের একটি
বড় মাধ্যম ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর জন্য হতে পারে।
তবে, অনেকেই জানতে চায় ফেসবুকে কত টাকা আয় করা যায়? বিশেষত প্রতি ১০০০ ভিউতে
আয় কেমন হতে পারে এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ফেসবুক রিলস বাংলাদেশে প্রতি ১০০০ ভিউ কত টাকা দেয়?
- ফেসবুক রিলস মূলত কি?
- কিভাবে ফেসবুক রিলস থেকে আয় করা যায়?
- মনিটাইজেসশন পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়তা?
- প্রতি ১০০০ ভিউতে সম্ভব্য আয় কত?
- বাংলাদেশে প্রতি ১০০০ ভিউতে গড় সম্ভব্য আয় কত?
- ফেসবুক রিলস থেকে আয় বাড়ানোর উপায় আলোচনা করা।
- ফেসবুক রিলস থেকে আয়ের উদাহরণ?
- ফেসবুক রিলসের সুবিধা ও অসুবিধা গুলোর আলোচনা।
ফেসবুক রিলস মূলত কি?
ফেসবুক মূলত হল ফেসবুকে একটি শট ভিডিও ফিচার, যা ব্যবহারকারীদের ১৫ থেকে ১
মিনিটের ভিডিও আপলোড করার সুযোগ করে দেয়। এটি মূলত টিকটক এবং ইনস্টাগ্রাম এর
রিলের মত কাজ করে। ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাদের ক্রিয়েটিভ প্রদর্শন
করতে পারে এবং এটি তাদের কাছে সহজে পৌঁছানোর একটি সুযোগ। এই বিশেষ ফিচারটিকে মূলত
ফেসবুক রিলস বলে। বর্তমানে ফেসবুকে সকল ভাইরাল কনটেন্ট এই রকম ফেসবুক রিলসের
মাধ্যমে আমাদের সকলের ফেসবুক টাইমলাইনে চলে আসে এবং আমরা স্কোর করতে থাকি আর সময়
পার করতে থাকি। এটি একটি মজার ফিচার।
আরো পড়ুনঃ সেরা ইনকাম অ্যাপস ২০২৪ সালের
কিভাবে ফেসবুক রিলস থেকে আয় করা যায়?
ফেসবুক পেজ থেকে আয় করার প্রধান উপায় হলো মনিটাইজেশন। ফেসবুক তার ক্রিয়েটরদের
জন্য "Reels Play Bonus Program" প্রোগ্রাম চালু করেছে যা রিলস ভিউ লাইক
শেয়ার এবং এনংঙ্গেজমেন্টের ভিত্তিতে আয় করতে দেয়। বাংলাদেশে এই প্রোগ্রাম
আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং অনেকেই এই ফেসবুক রিলস ব্যবহার করে
প্রতিনিয়ত মনিটাইজেশন পাচ্ছে এবং ইনকাম করার সুযোগ করে তুলেছে। ফেসবুক থেকে
প্রতিনিয়ত হাজারো মানুষ ইনকাম করছে তার অনেক বাস্তব উদাহরণ রয়েছে আমাদের সমাজে।
মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়তা?
- ফেসবুক পেজ বা প্রোফাইলের যোগ্যতাঃ ফেসবুক প্রোফাইল পেয়েছে ফলোয়ার এবং এনগেজমেন্ট অবশ্যই ভালো হতে হবে এবং ফেসবুক প্রোফাইলের যোগ্যতা ভেরিফাইড হতে হবে।
- ফেসবুক মিনিমাম ভিউসঃ আপনার রিলসে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কমপক্ষে একটি নির্ধারিত সংখ্যক ভিউ থাকতে হবে যার মাধ্যমে আপনি মনিটাইজেশন পাবেন এবং ফেসবুক পেজ থেকে ইনকাম করা শুরু করতে পারবেন।
- ফেসবুক মিনিমাম এক্টিভিটিঃ ফেসবুকে মিনিমাম এক্টিভিটি থাকতে হবে নিয়মিত এবং মানসম্মত ভিডিও আপলোড করতে হবে।
- ফেসবুক এর নীতিমালা মেনে চলাঃ ফেসবুকের নীতি মেনে চলতে হবে কনটেন্ট অবশ্যই ফেসবুক কমিটি গাইডলাইন মেয়ে তৈরি করতে হবে তা না হলে ফেসবুক পাবে না।
প্রতি ১০০০ ভিউতে সম্ভব্য আয় কত?
প্রতি ১০০০ ভিউতে সম্ভাব্য কত আয় হবে তা নির্ধারণ করে মূলত কয়েকটি ফ্যাক্টরির
উপর এগুলো হলঃ
- লোকেশনঃ বাংলাদেশের আয় তুলনামূলকভাবে কম কারণ এখানে বিজ্ঞাপন রেট (CPM) উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম যার কারণে লোকেশন একটা খুবই ইফেক্টিভ একটা বিষয় ফেসবুক মনিটাইজেশনে এবং আর্নিং এর ক্ষেত্রে।
- অডিয়েন্সের ধরনঃ অডিয়েন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনার ভিডিওর যদি উন্নত দেশের দর্শক দেখে থাকেন তাহলে আপনার CPM অনেক বেশি বাড়বে এবং আপনার অডিয়েন্স টার্গেট হতে হবে ইন্টারন্যাশনাল পর্যায়ে।
- ভিডিওর বিষয়বস্তুঃ ভিডিওর বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট কনটেন্টে যেমন টেকনোলজি ফাইনান্স এবং ইন্টারটেইনমেন্টের জন্য বিজ্ঞাপন দাতারা অনেক বেশি টাকা দিতে রাজি হন।
বাংলাদেশে প্রতি ১০০০ ভিউতে গড় সম্ভব্য আয় কত?
বাংলাদেশের ফেসবুক থেকে প্রতি ১০০০ ভিউতে আয় সাধারণত $0.10 থেকে $0.50 ডলার যা
(বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত) হতে পারে। তবে এটি
পরিবর্তনশীল এবং সময়, কনটেন্ট এবং দর্শকদের উপর নির্ভর করে। বর্তমানে
বাংলাদেশের ফেসবুক থেকে প্রতি ১০০০ ভিউতে অনেক ভালো পরিমাণের রেভিনিউ ইনকাম করতে
সক্ষম হচ্ছে বর্তমানে ডিজিটাল ফ্রিল্যান্সাররা।
ফেসবুক থেকে আয় বাড়ানোর উপায় আলোচনা করা
আপনার রিলস থেকে আয় বাড়ানোর জন্য কিছু কার্যকর কৌশল প্রয়োগ করতে পারেন যার
মধ্যে নিচে কয়েকটি উল্লেখ করা হলোঃ
- মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করুনঃ আপনার ভিডিও গুলো যেন মানসম্মত আকর্ষণীয় এবং উচ্চমানের হয় সেই রকম কনটেন্ট তৈরি করুন।
- নিয়মিত পোস্ট করুনঃ নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে থাকুন এবং দর্শক ধরে রাখার জন্য মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করুন।
- ট্রেন্ড ফলো করুনঃ নতুন ফ্রেন্ডের সঙ্গে মানানসের কন্টাক্ট তৈরি করুন এবং প্রতিনিয়ত ট্রেন এবং প্রোফাইল আপডেট করুন।
- অডিয়েন্স টার্গেটিং সঠিক করুনঃ আপনার অডিয়েন্স পছন্দ অনুযায়ী করুন যাতে আপনার অর্ডিন্যান্সের টার্গেটিং সঠিক থাকে।
- প্রমোশন করুন বা বুস্টিংঃ আপনার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে শেয়ার করুন এবং আপনার প্রোফাইল বা আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিনিয়ত বুস্টিং করতে থাকুন।
আরো পড়ুনঃ নতুন বছরের শুভেচ্ছা বার্তা ২০২৫
ফেসবুক রিলস থেকে আয়ের উদাহরণ?
ফেসবুক রিলস থেকে আয় করার মোটামুটি একটি বেসিক উদাহরণ নিয়ে আমরা এখন আলোচনা
করতে যাচ্ছি। সাধারণত আপনি যদি প্রতিদিন পাঁচটি রিলস আপলোড করেন এবং প্রতিটি রিলস
১০০০০ ভিউ পায় তাহলেঃ
- মোট ভিউঃ ৫*১০,০০০ = ৫০,০০০ ভিউ
- সম্ভাব্য আয়ঃ ৫০,০০০ / ১০০০*১০ টাকা = ৫০০ টাকা
এটি একটি আনুমানিক হিসাব। বাস্তবে এটি ভিউ, এংগেজমেন্ট এবং বিজ্ঞাপনদাতা রেটের
উপর নির্ভর করবে।
ফেসবুক রিলসের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলোর আলোচনা
সুবিধাঃ
- আয়ের সুযোগঃ বিনোদনের পাশাপাশি ফেসবুকের মাধ্যমে সুযোগ তৈরি হচ্ছে এবং অনেকে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে এবং পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম হচ্ছে।
- বিশাল অডিয়েন্সঃ ফেসবুকের বিশাল ব্যবহারকারী ভিত্তি থাকয় আপনার ভিডিও সহজে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে।
- ফ্রিল্যান্সিং বিকল্পঃ ফ্রিল্যান্সিং বিকল্প হতে পারে ফেসবুক কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করার একটি ভালো মাধ্যম।
অসুবিধাঃ
- কম CPM: উন্নত দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের সিপিএম কম যার তুলনায় বাংলাদেশের ভিউজ কম আসে এবং আর্নিংটা কম আসে।
- প্রতিযোগিতাঃ জনপ্রিয়তা পাওয়া কঠিন কারণ অনেক প্রতিযোগিতা রয়েছে এই প্রতিযোগিতার মধ্যে ব্যতিক্রম কিছু করে নিজের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে এবং প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে হবে।
-
প্ল্যাটফর্মের নীতিমালাঃ ফেসবুকের নীতিমালা কঠোর এগুলো মেনে চলা অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হতে পারে এই অসুবিধাগুলো মোকাবেলা করতে পারলেই আপনি একজন সফলভাবে ফেসবুক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এবং ফেসবুক থেকে আর্নিং শুরু করতে পারবেন।
উপসংহার
ফেসবুক রিলস বাংলাদেশে আয়ের একটি নতুন প্থ উন্মুক্ত করেছে। তবে প্রতি ১০০০ ভিউতে
আয়ের হার তুলনামূলকভাবে কম হলেও নিয়মিত এবং মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করে আয়
বাড়ানো সম্ভব। যদি আপনি ধারাবাহিকভাবে কাজ করেন এবং নতুন ফ্রেন্ডের সঙ্গে তাল
মিলিয়ে চলতে চান তাহলে ফেসবুক আপনার জন্য একটি ভালো আয়ের উৎস হতে পারে।
আমাদের বঙ্গ’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url