রমজান মাসের ৩০ টি রোজা রাখার ফজিলত ও গুরুত্ব


রমজান মাস হল মুসলমানদের জন্য বছরের একটি সবচেয়ে পবিত্র ও বরকতময় মাস। এই মাসে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা মুসলমানদের জন্য রোজাকে ফরজ করেছেন।

রমজান মাসের ৩০ টি রোজা রাখার ফজিলত ও গুরুত্ব

রমজানের ৩০ দিন রোজা রাখা শুধু একটি ধর্মীয় দায়িত্ব নয় বরং এটি আত্মশুদ্ধির এক মহাসুযোগ। এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো রমজান মাসে ৩০ টি রোজা রাখার ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ রমজান মাসের ৩০ টি রোজা রাখার ফজিলত ও গুরুত্ব

রমজান মাসের রোজা রাখার ফজিলত

রমজান মাসের রোজা রাখার ফজিলতের বিশেষত্ব নিয়ে কোরআন হাদিসের বহু আলোচনা রয়েছে। আল্লাহতালা কুরআনে বলেছেন, "রমজান মাস হল সেই মাস, যাতে কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে মানুষের জন্য হেদায়েত স্বরূপ এবং সত্য পথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা ও ফুরকান (সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী) ।" (সূরা বাকারাঃ১৮৫ আয়াত)

রমজান মাসের ৩০ টি রোজা রাখার গুরুত্ব

রমজান মাসের ৩০ টি রোজা রাখার গুরুত্ব অপরিসীম রোজার মাধ্যমে মানুষ নিজেকে খারাপ অভ্যাস থেকে মুক্ত করতে পারে এবং আল্লাহর প্রতি তাকওয়া অর্জন করতে পারে। আল্লাহ তা'আলা বলেন, "হে ঈমানদারগণ তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল; যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।" (সূরা বাকারাঃ ১৮৩)

রমজান মাসে আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জন করা

রমজান মাসে আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জন করা সম্ভব ও আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করা সম্ভব। রমজান মাসে আমরা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি করা এবং সিয়াম পালন করার মাধ্যমে আল্লাহতালার তাকওয়া অর্জন করা সম্ভব। "যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখে ও কিয়ামুল লাইন (তারাবিহ) আদায় করে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।" (বুখারী মুসলিম)


রমজান মাসের ৩০ টি রোজা রাখার ফজিলত ও গুরুত্ব

রমজান মাসে গুনাহ মোচন ও মাগফিরাত লাভ করা

রমজান মাসে গুনাহ মোচন ও মাগফিরাত লাভ করা যায় শুধু মাত্র আল্লাহ তায়ালার এবাদতের মাধ্যমে।"যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের  আশায় রমজানের রোজা রাখে তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।" (সহিহ বুখারী, সহিহ মুসলিম) 

রমজান মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত ও জাহান্নামের দরজা বন্ধ

রমজান মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত ও জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেন মহান আল্লাহ তায়ালা। রাসূল (সঃ) বলেছেন, "রমজান মাস শুরু হলে জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয় আর জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের শৃঙ্খলিত করা হয়।" (সহিহ বুখারী সহিহ মুসলিম)

রমজান মাসে লাইলাতুল কদরের বরকত লাভ সম্ভব

রমজান মাসে লাইলাতুল কদরের বরকত লাভ সম্ভব যা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে উত্তম। আল্লাহ তায়ালা বলেন, "লাইলাতুল কদর হলো হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।" (সূরা কদরঃ ৩) কারণ এই মাসে মহান আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজীদ নাজিল করেছেন। যার কারনে এই মাসকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলা হয়েছে। মহান আল্লাহতালা রমজান মাসে শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরকে খুঁজে বান্দাকে ইবাদত করার জন্য আদেশ দিয়েছেন।

রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস

রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস এই মাসের দোয়া আল্লাহ তায়ালা দোয়া কবুল করেন যা অন্যান্য মাসে ইবাদতের তুলনায় সত্তর গুণ বেশি সোয়াব পাওয়া যায় এবং সকলের মনের নেক আশা পূরণ করে দেন এবং সকলকে গুনাহ মাফ করে নিষ্পাপ করে দেন। রমজান মাসে ইফতারের সময় এবং সেহরির সময় দোয়া কবুলের সময়। এই সময় আল্লাহর নিকট দোয়া করলে আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না এবং তা কবুল করেন এবং মনের আশা পূরণ করে দেন। ইফতারের সামনে দোয়া কবুল করার একটি সর্বোচ্চ পর্যায়ের ইবাদত এই সময় থেকে আল্লাহর কাছে যাই চাইবেন আল্লাহ তাআলা আপনার মনের সকল আশা পূরণ করে দেবে।

রমজান তারিখ বার সেহরির শেষ সময় ইফতারের শেষ সময়
২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার 05:06 18:01
১ মার্চ শনিবার 05:05 18:01
২ মার্চ রবিবার 05:04 18:02
৩ মার্চ সোমবার 05:04 18:02
৪ মার্চ মঙ্গলবার 05:03 18:03
৫ মার্চ বুধবার 05:02 18:03
৬ মার্চ বৃহস্পতিবার 05:01 18:04
৭ মার্চ শুক্রবার 05:00 18:04
৮ মার্চ শনিবার 05:00 18:04
১০ ৯ মার্চ রবিবার 04:59 18:04

রমজান মাসে ৩০ টি রোজা রাখার উপকারিতা

রমজান মাসে ৩০ টি রোজা রাখার উপকারিতা রয়েছে অনেক রমজান মাসে রোজা রাখার ফলে মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং আমাদের একটি গতানুগতিক পর্যায়ের সাল্কুলেশন তৈরি হয়। যার ফলে আমাদের বডিতে ইমিউনিটি সিস্টেম অনেক শক্তিশালী রূপ ধারণ করে এবং বডি রিস্টার্ট হয়।

রমজান মাসে ৩০ টি রোজা রাখার স্বাস্থ্যগত অনেক উপকারিতা রয়েছ। সেগুলো হল
  • হজমতন্ত্র বিশ্রাম হয় ও পরিপাকক্রিয়া উন্নত হয়
  • শরীরের জমে থাকা অতিরিক্ত টক্সিন বের হয়ে যায়
  • উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে
  • ওজন কমাতে সাহায্য করে

রমজান তারিখ বার সেহরির শেষ সময় ইফতারের শেষ সময়
১১ ১০ মার্চ শুক্রবার 04:59 18:05
১২ ১১ মার্চ শনিবার 04:58 18:05
১৩ ১২ মার্চ রবিবার 04:57 18:06
১৪ ১৩ মার্চ সোমবার 04:56 18:06
১৫ ১৪ মার্চ মঙ্গলবার 04:55 18:07
১৬ ১৫ মার্চ বুধবার 04:54 18:07
১৭ ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার 04:53 18:08
১৮ ১৭ মার্চ শুক্রবার 04:52 18:08
১৯ ১৮ মার্চ শনিবার 04:51 18:09
২০ ১৯ মার্চ রবিবার 04:50 18:10

রমজান মাসে ৩০ টি রোজা রাখার মানসিক উপকারিতা ও রয়েছে। সেগুলো হল
  • ধৈর্য ও সংযম শেখায়
  • মানসিক প্রশান্তি দেয় ও স্ট্রেস কমায়
  • আত্মনিয়ন্ত্রণে ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়

রমজান মাসে ৩০ টি রোজা রাখার সামাজিক উপকারিতাও রয়েছে। সেগুলো হল
  • দরিদ্র অসহায়দের সাহায্য করার মানসিকতা গড়ে ওঠে
  • পরিবারের সাথে সম্পর্ক মজবুত হয়
  • সমাজে ভাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি পায়

রমজান মাসের ৩০ টি রোজা রাখার ফজিলত ও গুরুত্ব

রমজান মাসে রোজা রাখার সঠিক নিয়ম

রমজান মাসে রোজা রাখার সঠিক নিয়ম কুরআন শরীফের আলোকে আলোচনা করা হল। আমরা সবাই জানি যে,  রমজান মাসের ১ তারিখ রোজা রাখার দিন ১ তারিখের ভরে সেহরি খেতে হয়। সেহরি খাওয়া বুঝাতে মধ্যরাতের শেষ অংশে যে খাবার খাওয়া হয় তাকে সেহরি বলা হয়। নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন "সেহরি খাবারে বরকত রয়েছে" (বুখারী, মুসলিম)। 
নিয়ত করাঃ রোজার জন্য নিয়ত করা অত্যন্ত জরুরী। হারাম কাজ থেকে বিরত থাকাঃ মিথ্যা কথা, গীবত, ঝগড়া ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা। ইফতারের সময় তাড়াতাড়ি করাঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "মানুষ যতক্ষণ দ্রুত ইফতার করবে ততক্ষণ তারা কল্যাণে থাকবে" (বুখারী, মুসলিম) নফল ইবাদত বৃদ্ধিঃ কোরান তিলাওয়াত, নফল নামাজ, দোয়া, জিকির করা।

রমজান তারিখ বার সেহরির শেষ সময় ইফতারের শেষ সময়
২১ ২০ মার্চ বৃহস্পতিবার 04:49 18:10
২২ ২১ মার্চ শুক্রবার 04:48 18:10
২৩ ২২ মার্চ শনিবার 04:47 18:11
২৪ ২৩ মার্চ রবিবার 04:46 18:11
২৫ ২৪ মার্চ সোমবার 04:45 18:11
২৬ ২৫ মার্চ মঙ্গলবার 04:44 18:11
২৭ ২৬ মার্চ বুধবার 04:43 18:12
২৮ ২৭ মার্চ বৃহস্পতিবার 04:42 18:12
২৯ ২৮ মার্চ শুক্রবার 04:41 18:12
৩০ ২৯ মার্চ শনিবার 04:40 18:13

রমজান মাসে কুরাআন তিলওয়াতের ফজিলত

রমজান মাসে কুরাআন তিলওয়াতের ফজিলত অনেক রয়েছে। রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে বলতে গেলে প্রত্যেক হরফের উচ্চারণের ৭০ নেকি প্রদান করেন মহান আল্লাহতালা অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসে নেকি পরিমাণ অনেক বেশি। রমজান মাসে কুরআন তেলাওয়াত করলে পারে মহান আল্লাহতালার নৈকট্য লাভ করা যায়।

উপসংহার

রমজান মাসের ৩০ টি রোজা রাখা আমাদের জন্য একটি বিশাল নিয়ামত এবং আত্মশুদ্ধির মাধ্যম। এটি শুধুই ইবাদতের একটি অংশ নয় বরং আমাদের মুসলিম দৈনন্দিন জীবনের পরিবর্তন করার একটি উপায়। তাই আসুন আমরা এই পবিত্র মাসকে সামনে রেখে শপথ গ্রহণ করি। এই মাসে ৩০ টি রোজা রাখার নিয়ত করি। মহান আল্লাহতালা আমাদেরকে ৩০ টি রোজা রাখার তৌফিক দান করুক আমিন। পবিত্র মাসটির প্রত্যেকটি দিন আল্লাহর ইবাদতে কাটাই, গুনাহ থেকে বিরত থাকি, জান্নাতের পথে ইবাদত করতে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের বঙ্গ’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url